“অনীশ – হুমায়ূন আহমেদ”- বই রিভিউ


মিসির আলী সিরিজের একটি বই। হুমায়ূন আহমেদের লেখা বরাবরের মতই প্রলুব্ধকর। আর মিসির আলী সিরিজের মনস্তাত্ত্বিক লেখাগুলো পড়ে মজা একটু বেশিই পাই। অন্য উপন্যাসগুলোর মত এটাতেও ছিল চমৎকার কিছু হিউম্যান সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টস। ঘটনার সাবলীল বর্ণনা, মিসির আলির সমস্যার গভীরে হারিয়ে যাওয়া এবং সবশেষে রহস্য উন্মোচন।

উপন্যাসের শুরু হাসপাতালে। মিসির আলী হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন। কি অসুখ সেটা ডাক্তাররা ঠিক ধরতে পারছেন না। অনুমান করছেন লিভারে সমস্যা হয়েছে। একই হাসপাতালে অপারেশন করাতে আসে হালের জনপ্রিয় নায়িকা “রূপা”। ঘটনা চক্রে তারসাথে দেখা হয় “রূপার”।

রুপা অসম্ভব সুন্দরী, রুপবতী এবং কিঞ্চিৎ পাগলাটে একটা মেয়ে। সবারই একটা সুক্ষ চেষ্টা থাকে তাকে অভিভূত করার। তবে মিসির আলী তাকে সত্যিই অভিভূত করেছে। বুঝতে পেরেছে, এই লোকটা সবকিছুকে লজিক দিয়ে ব্যাখ্যা করতে ভালবাসে। লোকটার পরিচয় জানার পর তার প্রতি আগ্রহ আরো বাড়তে থাকে।

রূপা একটা সমস্যায় ভুগছে; যেটার কথা সে কাউকে বলেনি। অপারেশনের পুর্বে, সে তার সমস্যার কথা ডায়েরিতে লিখে মিসির আলিকে দিয়ে যায়।

হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে মিসির আলী বায়ু পরিবর্তনের জন্য ময়মনসিংহ চলে আসেন। মাঝ নদীতে নৌকায় পাখির উড়ে যাওয়া দেখেন। প্রকৃতিকে আরো নিবিড়ভাবে আলিঙ্গন করার চেষ্টা করেন। রুপার ডায়েরিটা তিনি এখানে এসেই পড়া শুরু করেন। জন্মের ৬ মাসের মাথায় বাবা মারা যাওয়া মেয়েটার কথা পড়তে থাকেন। যে কিনা বড় হয়েছে বদমেজাজি, পাগলাটে মায়ের কাছে……

এই উপন্যাসের পরিসরটা ছোট। মাত্র ৪৫ পৃষ্ঠার। তাই ঘটনাগুলো খুব বেশি শাখা-প্রশাখা বিস্তার লাভ করনি। সিরিজের অন্য বইগুলোর তুলনায় এটাতে রহস্যের সমাধান আমার কাছে সহজ বলেই মনে হয়েছে।
অন্য উপন্যাসগুলোর মত এটিও ছিল এপিগ্রামে ভরা। হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত উক্তি__

“কিছু-কিছু পুরুষ আছে, যারা রূপবতি সুন্দরী মেয়েদের অগ্রাহ্য করে একধরণের আনন্দ পায়। সচরাচর এরা নিঃসঙ্গ ধরনের পুরুষ হয়, এবং নারীসঙ্গের জন্যে তীব্র বাসনা বুকে পুষে রাখে।”
__এই বই থেকেই নেয়া। সব মিলিয়ে বইটা বেশ উপভোগ্য ছিল।

No comments

Powered by Blogger.